আমার রবীন্দ্র প্রীতি কোন পর্যায়ের সে সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই । কিন্তু কাছে পিঠে আমার যারা নিকটজন আছেন, তারা সবাই জানেন, আমি কবি এবং সাহিত্যিক রবি ঠাকুরকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করি । আমার কবিতা লেখা শুরু হওয়ার দশ বারো দিন পরের কথা । আমি তখনো জানি না আমি কি সত্যি কবি হব কিনা । বাঙালি মাত্রই কবিতা লেখে, তাই ওটা আমার কাছে কবি হওয়া বলে মনে হয় না ।
তো নীলক্ষেত থেকে কিনে আনলাম সঞ্চয়িতা । দু চার পাতা উল্টে পড়লাম নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ । কি বলব-এমন মোহাবিষ্ট অবস্থা আমার জীবনে কখনো হয়নি । আমি চার পাচবার পড়তেই পুরো কবিতাটি আমার মুখস্থ হয়ে গেল । আমি সিগ্ধান্ত নিলাম আমি কবি হব । আমি লিখে যাব আজীবন, যত খারাপ হোক- আমি কবি হব, যেমন কবি হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ, চিন্তায় মননে, লেখনীতে ।
তার পর লিখতে শুরু করা । তো যাই হোক নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ আমার আবৃত্তির ও উৎস । সবাই হয়ত জানেন, আবৃত্তি কাউকে শেখানো যায় না, ভেতর থেকে আসতে হয় । আমার ভিতরে কবিতার বোধ এনে দিল এটি । তো যাই হোক আমি আবৃত্তি করি, নিজের, রবিঠাকুরের, নজরুল এবং জীবনবাবুর কবিতা । সবই ভাল লাগে । আজ আপনার শুনবেন আমার কন্ঠে আবৃত্তি । রবিঠাকুরের স্বপ্নে কবিতাটি । আশা করি ভাল লাগবে ।
স্বপ্নে
সুন্দর তুমি এসছিলে আজ প্রাতে,
অরুণ বরণ পারিজাত লয়ে হাতে ।
নিদ্রিতপুরী পথিক ছিল না পথে,
একা চলি গেলে তোমার সোনার রথে-
বারেক থামিয়া মোর বাতায়ন পানে !
চেয়েছিলে তব করুন নয়ন পাতে ।
স্বপন আমার ভরেছিল কোন গন্ধে,
ঘরের আধার কেপেছিল কী আনন্দে !
ধূলায় লুটানো নিরব আমার বীণা,
বেজে উঠেছিল অনাহত কী আঘাতে ।
কতবার আমি ভেবেছিনু, ‘উঠি উঠি
আলস ত্যজিয়া পথে বাহিরাই ছুটি।’
উঠিনু যখন তখন গিয়েছ চলে-
দেখা বুঝি আর হল না তোমার সাথে ।
তো এটা একটা কবিতা যার অনেক রকম মানে বের করা সম্ভব । যার যেমন মনে হয় ধরে নিন । আশা করি আমার আবৃত্তি আপনাদের ভাল লাগবে ।
এটা একদমই raw material, কোন রকমের এডিটিং, শব্দ সংযোজন কিচ্ছু করা হয়নি । তাই আপনাদের যদি ভাল না লাগে ক্ষমাপ্রার্থী ।